বনি আমিন, কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধিঃ ঢাকার কেরানীগঞ্জে হাসনাবাদ এলাকার সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক শাখায় বিদেশ থেকে পাঠানো রেমিট্যান্সের টাকা ব্যাংক কর্মকর্তার স্বাক্ষর নকল করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে তুলে নেয়া চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩৮ হাজার নগদ টাকা ও ব্যাংকের ইসলামী ব্যাংকের ১২টি নকল ক্যাশ ম্যামো উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলো- মাদারীপুরের শিবচর থানার বাহেরাতলা এলাকার রুস্তম শেখের ছেলে রিপন ওরফে হোন্ডা রিপন (৩৮), রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মিরহাজিরবাগ এলাকার আলী মুন্সির ছেলে রহিম মুন্সী (২৮), কেরানীগঞ্জ মডেল থানার রসুলপুর এলাকার মালেক মোড়লের ছেলে মোঃ জুয়েল (৩১), কেরানীগঞ্জ মডেল থানার জনি টাওয়ার এলাকার লাল মিয়ার স্ত্রী কুলসুম বেগম (৪০) ও গাজীপুর টঙ্গী পূর্ব থানার আব্দুল আউয়াল মিয়ার ছেলে আসাদুজ্জামান (৫৫)।
১৬ জুলাই রোববার দুপুরে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, চক্রটি বিভিন্ন সময়ে দেশের পাঁচটি ব্যাংকের ১১ টি শাখা থেকে মোট ৭০ লক্ষাধিক টাকা জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে তুলে নিয়েছে বলে স্বীকার করেছে। সর্বশেষ গত ৩ মে হাসনাবাদ শাখা থেকে ৫ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা তুলে নিলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
মামলার তদন্তে সিসিটিভি ফুটেজ ও তথ্যপ্রযুক্তি সহায়তায় কেরানীগঞ্জ, গাজীপুর ও ডিএমপি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। আসাদুজ্জামান আরও জানান, চক্রটির মোট কতজন সদস্য এবং তারা আরও কি কি ধরনের অপরাধ করেছে, এ বিষয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য গ্রেফতারদের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হবে। এই সময় উপস্থিত ছিলেন।
আমিনুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, (ক্রাইম এন্ড অপস-দক্ষিণ) এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে শাহাবুদ্দীন কবির বিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, কেরানীগঞ্জ সার্কেল এর নেতৃত্বে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার একটি চৌকস তদন্ত টিম সংঘবদ্ধ এই প্রতারক চক্র যারা ব্যাংক কর্মকর্তাদের বোকা বানিয়ে নকল রেমিটেন্স পেমেন্ট স্লিপ (রিয়া) দেখিয়ে প্রবাসীদের কষ্টার্জিত রেমিটেন্স এর টাকা ব্যাংক থেকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে তাদেরকে সনাক্ত করার জন্য ব্যাপক কার্যক্রম শুরু করে। তদন্তকালে জানা যায় হাসনাবাদের সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড শাখা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানের আরো অন্যান্য ব্যাংকের কর্মকর্তারা একইভাবে উক্ত রেমিটেন্স প্রতারক চক্র দ্বারা প্রতারনার স্বীকার হয়েছে। তদন্তদল। বিভিন্ন ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা পূর্বক সন্দিগ্ধ আসামীদের সনাক্ত করে।
তারপর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আসামীদের গতিবিধি ও অবস্থান সনাক্ত করা হয়। একপর্যায়ে সংঘবদ্ধ এই রেমিটেন্স প্রতারক চক্রের সদস্যদের চিহ্নিত ও অবস্থান সনাক্তের পর শাহজামান, অফিসার ইনচার্জ, দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানা এর নেতৃত্বে একটি অভিযানিক দল গাজীপুর, ডিএমপি ঢাকা সহ বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার সহিত সরাসরি জড়িত ৫জন আসামী ১। রিপন মিয়া ও হোল্ডা রিপন, ২। রহিম মুন্সি, ৩। মোঃ জুয়েল, ৪। কুলসুম বেগম, ৫।আসাদুজ্জামান স্বপনদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তারা দীর্ঘ দিন ধরে দেশের বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা হতে একইভাবে রিয়া পেমেন্ট স্লিপ জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংক কর্মকর্তাদের ধোকা দিয়ে প্রবাসীদের রেমিটেন্স এর টাকা প্রতারনামূলক ভাবে আত্মসাত করে আসছিল।