• শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০০ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু বাংলাদেশ চোখের সেবা সম্প্রসারণে অরবিসের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করবে ব্রিটেন বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের বিভাগীয় সমাবেশ নিঃ স্বার্থ সমাজ কল্যাণ সংগঠনের নব নির্বাচিত কমিটির পরিচিতি ও মাদক বিরোধী সভা শেরপুরে হাসপাতালের সেই তত্ত্বাবধায়কের অপসারণ দাবীতে সাংবাদিকদের বিক্ষোভ বিচারের পর আ.লীগকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে : ড. ইউনূস আমরা এক পরিবার, কেউ কারো শত্রু হবো না: প্রধান উপদেষ্টা সীমান্তের বিএনপি নেতা সাবেক ইউপি সদস্যের ভাতিজা ইয়াবাসহ আটক আওয়ামীপন্থী পুলিশ কর্মকর্তাদের নামের তালিকায় ময়মনসিংহের ওসি সফিকুল ইসলাম

হাসিনার জন্য এগিয়ে আসুন, দিলীপদের জন্য নয়

সংবাদদাতা / ২০১ পাঠক ভিউ
আপডেট সময় : বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৩

সাঈদুর রহমান রিমন: প্রধানমন্ত্রী শুধু এতিমই নন, অভাগাও বটেন। ব্যক্তি শেখ হাসিনার জন্য আসলেই কেউ নেই। কেউ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাকে তোয়াজ করেন, কেউবা দলীয় সভানেত্রী হিসেবে সম্মান শ্রদ্ধায় গদগদ হন। মোসাহেবরা চোখ, মুখ, চেহারায় নিরেট আন্তরিকতার সেরা অভিনয় ফুটিয়ে তুলে নিজেদের ব্যক্তিগত ফায়দা হাসিল করে নেন শুধু, কিন্তু তারা কেউ শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত কোনো কাজেই লাগেন না। অথচ কোথাকার কোন দিলীপ বাবুর জন্য লোকজনের কোনো অভাব নেই। উচ্চ পদস্থ প্রশাসনিক কর্মকর্তা, রঙ বে রঙের নেতা, দাপুটে মাস্তান, হাম বড়া সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি সবাই যেন দিলীপ আগরওয়াল কে রক্ষা করতে মানবঢাল হয়ে দাঁড়ালেন। নরমে গরমে আবেগে হুমকিতে তাদের প্রাণপণ চেষ্টা চলতে থাকলো,,,

অভিজাত বাণিজ্যে অল্প সময়েই অভাবনীয় মাত্রায় ফুলে ফেঁপে ওঠা দিলীপ কুমার আগারওয়ালের কথাই বলছি। বৈধভাবে এক রত্তি ডায়মন্ড আমদানি হয় না, এদেশে ডায়মন্ডের খনিও নেই – অথচ অজ্ঞাত প্রাপ্তির সেই ডায়মন্ডের বিশাল বাণিজ্য ফেঁদে বসেছেন আগারওয়াল, দেশের নানা স্থানে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড নামে তার প্রায় একশ চাকচিক্য শোরুম আছে। বিশালকায় শোরুম বানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকাসহ একাধিক দেশেও। এসব তো আমাদের গৌরবের বিষয় হওয়ার কথা। চুয়াডাঙ্গার অতি সাধারণ এক পরিবার থেকে উঠে আসা দিলীপ আগারওয়াল বাংলাদেশের সন্তান হিসেবে ইউরোপ আমেরিকায় যদি বাণিজ্যিক সফলতা অর্জন করে তাতো গোটা বাঙালির গর্ব। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে তার বিরুদ্ধে চোরাচালান, হুন্ডিতে টাকা পাচারসহ অবৈধ উপায় শত শত কোটি টাকার মালিক বনেছেন বলে অভিযোগ উঠা নিয়ে।

এ ব্যাপারে দুদক ব্যাপক অনুসন্ধান চালালেও তিন বছর পরে চুপিসারে তাকে দায়মুক্তিও দিয়ে দেয়। প্রশ্ন উঠে কাড়ি কাড়ি টাকা ঢেলে তবেই দায়মুক্তি অর্জন করা নিয়েও। অতি সম্প্রতি উচ্চ আদালত দুদকের কাছে দায়মুক্তি প্রদানের নথিগুলো তলব করেছে। শুধু মহামান্য আদালতের নথি তলবের বিষয়টি প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা প্রতিদিন। যথারীতি সে বিষয়ে একটা ঘোষণাও দেয়া হয়। এতেই তোলপাড় চলতে থাকে সর্বত্র, একের পর এক তদবির, সুপারিশ আর নরমে গরমে হুমকি ধমকিও চলে সমানতালে। উচ্চ পর্যায়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ নেতা, মাস্তান, ধনাঢ্য ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও ভিন্ন নাগরিকদের কাছ থেকেও নিউজ প্রকাশ না করতে অনুনয় বিনয় চলতে থাকে, পাশাপাশি বিশেষ সুবিধা প্রাপ্তিরও।

বিব্রত হন ঢাকা প্রতিদিন সম্পাদক, আর আমি অবাক বিস্ময়ে ভাবতে থাকি। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, তার ঘনিষ্ট আত্মীয় বিয়াই, তাওই, স্বজন পরিজন অনেকের বিরুদ্ধেই আমি ঢাউস আকারের নিউজ করেছি। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর বেয়াইনের মৃত্যু নিয়েও আমি বেইয়াইকে অভিযুক্ত বানিয়ে পর পর কয়েকটি চাঞ্চল্য সৃষ্টি নিউজ করেছি। কিন্তু কোনোদিন কোনো নেতা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, এমপি, চেয়ারম্যান কেউ এসে বলেনি, প্লিজ আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রীর পরিবারকে বিতর্কিত বানিয়ে নিউজ কইরেন না। অথচ কোন প্রত্যন্ত সীমান্ত জেলার এক দিলীপের হর্তা কর্তা শ্রেণীর কত আবেগ, কত ভালোবাসা। একবার প্রশ্ন করতে মন চায়, দিলীপের জন্য এত আবেগ ক্যা রে,,,

আমি ভাবি,,,প্রধানমন্ত্রীর জন্য জীবনবাজি রাখার ঘোষিত লোকজনও ছিটে ফোটা যা কিছু করেন সেটাও দলের জন্য, নয়তো নিজেদের কোনো নেতার জন্য। শেখ হাসিনা, তার ছেলে মেয়ে কিংবা স্বজন পরিজনের জন্য বাস্তবে কেউ কিছুই করেন না। পচাত্তর পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসী বাঙালিরা নিঃস্বার্থ ভাবে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন এটা শত ভাগ সত্য। ১৯৭৯ সালে দেশে প্রত্যর্পণের পর পর বঙ্গবন্ধু কন্যার প্রতি কিছু মানুষ ভালোবাসার নানা নিদর্শন দেখিয়েছেন। বিভিন্ন জনসভা থেকে ফেরার সময় সাধারণ মানুষের ভালোবাসার নিদর্শন স্বরূপ উপহার সামগ্রী বহন করে নিতেও বড়সড় হুডখোলা জীপের প্রয়োজন পড়তো। এখন সেসব ভালোবাসা ব্যক্তি শেখ হাসিনার ভাগ্যে জোটে না বললেই চলে।

নিঃস্বার্থভাবে মানুষগুলো হারিয়ে যাওয়ায় এখন মেকি ভালোবাসার জন্ম নিয়েছে, বাণিজ্যিক রূপও পেয়েছে আধুনিক ভালোবাসার। প্রকৃত ভালোবাসা একেবারেই নেই তা বলবো না। কারণ, নব্বই দশক থেকে চলতি সময় পর্যন্ত ব্যক্তি হাসিনার প্রতি ভালোবাসার মাত্র দুটি নজির দেখেছি আমি। এক. গফরগাঁওয়ের অভাবী এক কৃষক তার একমাত্র সম্বল দুই শতক ভিটে কাউকে কিছু না বলেই প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনার নামে রেজিস্ট্রি করে দেন। দুই. ২১ আগস্টের নারকীয় গ্রেনেড হামলার সময় মানবঢাল বানিয়ে তাকে বাঁচানোর ভালোবাসার দৃশ্যটিও আমি কখনো ভুলতে পারবো না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিস্তারিত...