মোঃ তারিকুল ইসলামঃ মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে অটো- রিকশা চালক হত্যা মামলার মূল হোতাসহ তিন আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১০)। আজ শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সকালে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব এ তথ্য জানান।
র্যাব জানায়, র্যাব-১০ এর একটি অভিযানিক দল গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে, তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় এবং র্যাব-৮ এর সহযোগীতায় বরিশালের গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি অভিযান চালিয়ে মোস্তফা হত্যার মূলহোতা মিরাজুল ইসলাম (২৮), কে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত মিরাজুল এর দেয়া তথ্যমতে বৃহস্পতিবার দিনগত রাত সোয়া ১টার দিকে র্যাব-১০ এর আভিযানিক দল উপজেলার পদ্মা উত্তর থানাধীন মাওয়া চৌরাস্তা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত হত্যার সাথে সরাসরি জড়িত অপর দুই আসামি ১। স্বপন ফরাজী (২৮), ও পাপ্পু সরদার (২৪), দেরকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত মিরাজ উক্ত হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী। সে তার অন্যতম সহযোগী স্বপন ও পাপ্পুকে নিয়ে মোস্তফাকে হত্যা করে তার ইজিবাইক ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। তাদের পরিকল্পনা মোতাবেক, গত ০১ অক্টোবর রাত ৭টার দিকে মিরাজ, স্বপন ও পাপ্পু পদ্মা উত্তর থানাধীন মাওয়া চৌরাস্তা এলাকা হতে ভিকটিম মোস্তফাকে মিরাজের ভাড়া বাসায় যাওয়ার কথা বলে মোস্তফার অটোরিকশা ভাড়া করে মিরাজের ভাড়া বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা করে।
পরবর্তীতে রাত সাড়ে ৯টার দিকে পূর্বপরিকল্পিত সুবিধাজনক স্থান উপজেলার হলদিয়া এলাকায় পৌছালে মিরাজ মোস্তফাকে ইজিবাইক থেকে নামতে বলে। অতঃ পর মোস্তফা ইজিবাইক থেকে নামার সাথে সাথে স্বপন মোস্তফার গলায় রশি পেঁচিয়ে ধরলে মোস্তফা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। মোস্তফা মাটিতে লুটিয়ে পড়ার সাথে সাথে পাপ্পু মোস্তফার দুই পা চেপে ধরে এবং মিরাজ মোস্তফার মুখ মাটির সাথে চেপে ধরে যাতে করে মোস্তফা কোন ডাক-চিৎকার করতে না পারে।
ভিকটিম মোস্তফার মৃত্যু নিশ্চিত করার পর মিরাজ, স্বপন ও পাপ্পু মিলে মোস্তফার লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে ঘটনাস্থলের পাশে একটি ডোবায় ফেলে রেখে মোস্তফার ইজিবাইকটি নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়।
জানা যায়, উপজেলার দক্ষিণ মেদিনী মন্ডল (মিস্ত্রিপাড়া) এলাকার বাসিন্দা মোস্তফা (১৮) অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
গত ১ অক্টোবর বিকেলে অটোরিকশা নিয়ে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি তিনি। ওইদিন রাত থেকে মোস্তফার ফোন বন্ধ পায় তার পরিবার। পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন৷ এরপরে গ্যারেজ মালিকের কাছে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারে যে, মোস্তফা সন্ধ্যা ৬ টায় অটোরিকশা নিয়ে বের হয়েছে।
পরের দিন ২ অক্টোবর সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানাযায়, উপজেলার হলদিয়ার তিন দোকান এলাকায় একটি ডোবায় গলায় রশি পেঁচানো অজ্ঞাত মরদেহ পরে রয়েছে। পরে মোস্তফার বাবা ও তার আত্মীয়-স্বজন মরদেহটি মোস্তফার বলে সনাক্ত করে৷ স্থানীয় লোকজন লৌহজং থানা পুলিশকে খবর দিলে লাশের সুরতহাল প্রস্তুত করে লাশের ময়না তদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় মৃতের বাবা থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে৷