• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০১ পূর্বাহ্ন

১৫৩ সিনেমা হলে ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’

সংবাদদাতা / ২৬০ পাঠক ভিউ
আপডেট সময় : শনিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৩

বিনোদন ডেস্ক

স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিঃসন্দেহে জাতির জীবনে এক প্রাণভোমরা। পরাধীন জাতির ক্রান্তিকালে জাতিকে দিকনির্দেশনা এবং মুক্তির আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা এই জাতি চিরদিন মনে চিরদিন ধারন করবে। মুক্তিকামী বাঙালির দুর্দিনের এই সিপাহশালারের জীবনকাল এবং তার দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামকে সিনেমার ক্যানভাসে চিত্রিত করেছেন বলিউডের খ্যাতিমান চলচ্চিত্র পরিচালক শ্যাম বেনেগাল। বঙ্গবন্ধুর শৈশব, কৈশোর, যৌবনের বেড়ে ওঠা, বাঙালি জাতিকে পাকিস্তানিদের শোষণ এবং জুলুম থেকে মুক্তির লড়াইয়ে জাতির এই শ্রেষ্ঠ নেতার আদ্যোপান্ত উঠে এসেছে ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’ নামের এ জীবনীতে।

সাথে স্থান পেয়েছে ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন এবং ’৬৬-এর ছয় দফা। স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে উপজীব্য করে নির্মিত এ চলচ্চিত্রটিতে প্রাসঙ্গিকভাবে উঠে এসেছে খন্দকার মোশতাক, টিক্কা খান, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং মওলানা ভাসানীর চরিত্রগুলো। বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন নেছাসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চরিত্রও ছিল ঘটনার প্রাসঙ্গিকতায়। সেই সাথে ছিল জাতিকে উজ্জীবিত করার মূলমন্ত্র সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ।

বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন ও জেলজীবনসহ নানা বিষয় পর্দায় উঠে এসেছে শৈল্পিকভাবে। বঙ্গবন্ধুর ক্যারিশমাটিক উত্থানের পাশাপাশি তাঁর করুণ এবং বেদনাদায়ক পরিসমাপ্তি চিত্রিত ছিল সমগ্র ছবিটিতে। গতকাল শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীসহ দেশের মোট ১৫৩টি সিনেমাহলে একসাথে মুক্তি পেয়েছে চলচ্চিত্রটি। মুক্তির আগ থেকেই আলোচনায় থাকা ছবিটি নিয়ে দর্শকদের বেশ আগ্রহ দেখা যায়।

ছবিটি কবে মুক্তি পাবে- দর্শকদের এমন জিজ্ঞাসা মুক্তির অনেক আগে থেকেই। আর গতকাল মুক্তির পরদর্শকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল বায়োপিক ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’। আর তার প্রমাণ পাওয়া গেছে রাজধানীর প্রতিটি প্রেক্ষাগৃহে দর্শকদের উপচেপড়া ভিড়ের চিত্রে। সিনেমাহলগুলোর সামনে দর্শকদের বাঁধভাঙা জোয়ারে স্মৃতির ফ্রেমে ভেসে উঠেছিল সিনেমার হারিয়ে যাওয়া সেই স্বর্ণালি অতীত। রাজধানীর বাইরের হলগুলোতেও দর্শকদের বাঁধভাঙা স্রোত ছিল বলে জানিয়েছেন আমাদের প্রতিনিধিরা।রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য প্রেক্ষাগৃহে দর্শকদের উপচেপড়া ভিড় সিনেমাটিকে সফলতার পথে এগিয়ে রেখেছে।

সেই সাথে জাতির পিতার প্রতি এ দেশের আপামর জনতার ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। ছবি দেখে অনেক দর্শক নিজেদের আবেগ সংবরণ করতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। ছবিটি দেখার সময় অঝোরে কেঁদেছিলেন দর্শকদের অনেকেই, আবার সিনেমাহল থেকে বেরিয়েও অনেকে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি কেউ কেউ। চলচ্চিত্রটিতে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী চরিত্রে তৌকির আহমেদের অভিনয় দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে।

তবে, সিনেমাটিতে তার বয়স বৃদ্ধির গ্রাফটা দুর্বল মনে হয়েছে। মওলানা ভাসানীর চরিত্রে রাইসুল ইসলাম আসাদ এবং খন্দকার মোশতাকের চরিত্রে ফজলুর রহমান বাবু নিজেদের অভিনয়ের শৈল্পিকতাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী চরিত্রে দিঘী এবং তিশা দুজনেই নিজেদের সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তাদের অভিনয়ে সেটি ফুটে উঠেছে। তবে, বঙ্গবন্ধুর মতো বলিষ্ঠ নেতৃত্বের একজন সিংহপুরুষের চরিত্রে আরেফিন শুভ সেভাবে নিজেকে তুলে ধরতে পারেননি। শুভর হোম ওয়ার্কের সাথে তার পরিশ্রমের সঠিক সংমিশ্রণ ঘটানো সম্ভব হয়নি বলেই শুভ তার অভিনয় দুর্বলতা পুরোটা কাটিয়ে উঠতে পারেননি। সিনেমাহল থেকে বেরিয়ে আসা কয়েকজন দর্শক জানান, বঙ্গবন্ধুর মতো একজন বলিষ্ঠ ও সিংহপুরুষের চরিত্রে আরেফিন শুভর চেয়ে অন্য কাউকে নিলে আরেকটু ভালো হতো। তবে, শুভও তার সেরাটা দেওয়ার যথেষ্ট চেষ্টা করেছেন। এ ছাড়া তাজউদ্দীন আহমেদের চরিত্রে রিয়াজকে খুবই বেখাপ্পা মনে হয়েছে। এই চরিত্রটিতে রিয়াজের স্থলে অন্য কাউকে নিলে তাজউদ্দীনের চরিত্রটি আরও ভালোভাবে ফুটিয়ে উঠত। ছবিটিতে রিয়াজের অভিনয় দুর্বলতায় বিরক্ত ছিলেন দর্শকরা। সামান্য দুই-একটি বিষয় বাদ দিলে পুরো সিনেমাটি বাঙালি জাতির জন্য নিঃসন্দেহে একটি প্রামাণ্য দলিল হয়ে থাকবে। বড় পরিসরের বিশাল আয়োজনে ভারত এবং বাংলাদেশের মনোরম লোকেশনে সিনেমাটির দৃশ্য চিত্রায়ন করা হয়েছে। ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশ এবং ভারতের শিল্পীরা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিস্তারিত...