• সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ১১:০১ অপরাহ্ন

আবরার ফাহাদের স্মরণসভায় ছাত্রলীগের হামলা : আহত ১৬

Reporter Name / ৭৮ Time View
Update : শনিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২২

বিডিসি ক্রাইম বার্তা ডেস্কঃ- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বুয়েটের আবরার ফাহাদের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী তে আয়োজিত স্মরণসভায় হামলা করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হামলায় কমপক্ষে ১৬ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩ টায় ‘আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদ’- এর আয়োজনে স্বরণসভাটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি সফল করতে রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হয় ‘আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদ’ নামক সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। তবে তাদের কর্মসূচি শুরু হওয়ার আগেই ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী গিয়ে তাদের বাধা প্রদান করে। এ সময় তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা টিএসসিতে অবস্থানরত জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ডাক দেয়।

এ সময় হল ছাত্রলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন রানা ও সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেনের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা গিয়ে মারধর শুরু করে। মারধরের একপর্যায়ে কেউ শাহবাগের দিকে আবার কেউ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে দৌড় দেয়। তাদের পিছু নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী’রা বেধড়ক পেটাতে দেখা যায়। এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হেলমেট, হাতে কাঠ, লাঠি, বাঁশসহ অবস্থান করতে দেখা যায়। হামলায় ছাত্রলীগের ৪ জন সহ উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৬ জন আহত হয়।

আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের অন্যতম সংগঠক আকরাম হোসেন বলেন, আমাদের কর্মসূচি শুরু না হতেই তারা আমাদের ওপর হামলা করে। আমাদের ব্যপক মারধর করে। মারধরে আমাদের ১২ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়েছে। এদের মধ্যে জাহিদ আহসান, হাসিবুল হাসান ও ৪- ৫ জনের অবস্থা বেশি গুরুতর। আহতরা ঢাকা মেডিক্যালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, একটি দল ক্যাম্পাসে সবসময় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। অনুমতি না নিয়ে প্রোগ্রাম করলে যেকোনো পরিস্থিতি তৈরী হলে সেটার দায় তাদের নিজেদের নিতে হবে। এদিকে আহতদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগে নেয়া হলে সেখানেও উপস্থিত হন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

সেখানে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ সমাজসেবা সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের নেতৃত্বে উপ দফতর সম্পাদক আব্দুর রহিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বরিকুল ইসলাম বাঁধন, ফেরদৌস আলম, সুজন শেখ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক আল আমিন রহমানসহ অনেক কেন্দ্রীয় নেতা এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের চড়াও হয়ে হাসপাতালের ভেতরে ছুটে যেতে দেখা যায়। তারা ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা অনুরোধ করে তাদের বাইরে বের করে গেট লাগিয়ে দেন। ওই পরিস্থিতিতে মেডিক্যালের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হয় এবং রোগী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। ফলে দুর্ভোগে পড়েন তারা।

তবে হাসপাতালে বিশৃঙ্খলার ব্যপারে ছাত্রলীগের উপ সমাজসেবা সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, আমরা টিএসসির একটা ঘটনায় আহত হওয়া আমাদের নেতাকর্মীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে এখানে নিয়ে এসেছি। কিন্তু তারা আমাদের দেখে হঠাৎ করে আমাদের ওপর চড়াও হয়ে ধাক্কা দিতে থাকে। এটা হাসপাতাল বারবার বলার পরও তারা আমাদের ধাক্কা দিতে থাকে এবং মারতে আসে। ফলে হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট হয়।

ঘটনার পর হাসপাতালের বাইরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিলে ভেতরে আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের নেতাকর্মীরা আটকে পড়ে। এরপর তাদের পুলিশ আটক করে। তবে তাদের গ্রেফতারের ব্যপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি শাহবাগ থানা পুলিশ।

এদিকে হত্যার উদ্দেশে হামলা উল্লেখ করে মামলার প্রস্তুতি নিয়েছেন ছাত্রলীগের আহত সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিম উদ্দীন। তিনি বলেন, আমরা টিএসসিতে একটা প্রোগ্রামের উদ্দেশে যাচ্ছিলাম। তখন দেখি তারা রাজু ভাস্কর্যের সামনে দাঁড়িয়ে আবরার ফাহাদের একটা প্রোগ্রাম করছে। সেখানে আমরা আখতার (ঢাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি) ছাড়া আর কাউকে চিনি না। সব বহিরাগত নিয়ে আসছে। তাই তাদেরকে বললাম এখানে বিশৃঙ্খলা না করে চলে যেতে। কিন্তু তারা আমাদের গালিগালাজ করে এবং আখতারের নেতৃত্বে হত্যার উদ্দেশে আমাদের ওপর হামলা করে। তাই আমরা মামলা করার উদ্দেশে থানায় এসেছি।#

Please Share This Post In Your Social Media


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category