নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ব্যতিক্রম আইডিয়া, নজিরবিহীন অনুসন্ধান। প্রতিদিনের কাগজ এর সেই অনুসন্ধানে জেলা পর্যায়ে বিদ্যমান ঘুষ-দুর্নীতি-লুটপাটের ভয়ঙ্কর চিত্র বেরিয়ে এসেছে। দীর্ঘ প্রতিবেদনের লাইনে লাইনে ফুটে উঠেছে ময়মনসিংহের অজানা কাহিনী। সেখানে নিয়ন্ত্রণহীন ব্যবস্থায় সরকারি তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা বিত্ত বৈভবের পাহাড় বানিয়েছেন। কানাডার বেগম পাড়ার আদলে তারাও সারি সারি আলীশান ভবন, অভিজাত ফ্ল্যাট-এপার্টমেন্ট মিলিয়ে গড়ে তুলেছেন আরেক বেগম পাড়া।
ময়মনসিংহ নগরীর আমলাপাড়া ও গোলকিবাড়ী এলাকাতে রয়েছে এ বেগম পাড়ার অবস্থান। জেলার সরকারি দপ্তরের কেরানি, ক্যাশিয়ার, উচ্চমান সহকারী, প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ এমএলএসএস-পিওনরা সেখানেই নির্মাণ করেছেন আট তলা থেকে ১৬ তলা উচ্চতার বিশাল বিশাল ভবন। আলীশান ভবনাদি ছাড়াও তারা নগরীর বিভিন্ন স্থানে ক্রয় করেছেন প্রায় সাড়ে পাঁচ‘শ একর জায়গা। নিম্ন আয়ের এ কর্মচারীরা বহুদামি জায়গা, জমি, অভিজাত ফ্ল্যাট, বহুতল ভবনসহ সহায় সম্পদের বেশিরভাগ তাদের বেগমদের নামেই কিনেছেন, উপহারও দিয়েছেন অজ্ঞাত সূত্রে।
পত্রিকাটির অকুতোভয়ী সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে-ময়মনসিংহের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর ১৪৩ জন কর্মচারীর মধ্যে ৬৭ জনই আলাদীনের চেরাগ স্টাইলে কোটিপতি হয়েছেন। কারো কারো অর্থ-সম্পদের পরিমাণ শত কোটির ঘরও পেরিয়ে গেছে। সরকারি কোন দপ্তরের কোন কোন কর্মচারী এমন বিত্তবান হয়েছেন তাদেরও বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি কৃষি, বন, পুলিশ, সিটি কর্পোরেশন, বিদ্যুত, গ্যাস সেক্টরের মতো অন্যান্য দপ্তরের কারা কারা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে উঠেছেন- অনুসন্ধান চলছে তাদের নিয়েও।
দুর্নীতি-লুটপাটের মাধ্যমে বেশুমার বিত্তশালী হওয়া, বিদেশে টাকা পাচারসহ দেশ বিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্তদের বিরুদ্ধে চলমান কলমযুদ্ধে প্রতিদিন কাগজের এ অনুসন্ধান ভিন্নমাত্রা যুক্ত করলো বৈকি। এ অনুসন্ধানের ছকে জেলায় জেলায় দাপুটে হয়ে ওঠা, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অস্বাভাবিক অর্থবিত্ত হাতানো লুটেরাদের যাবতীয় তথ্যও তুলে ধরুন সাংবাদিক বন্ধুরা। তাহলে দেশ ও জাতির স্বার্থে অতুলনীয় ভূমিকা রাখার গৌরবদীপ্ত মুকুটটি গণমাধ্যমের দখলেই থেকে যাবে। দেশের সকল ক্রান্তিকালে সাংবাদিকদেরই তো হতে হয় শেষ ভরসাস্থল…