• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:১১ অপরাহ্ন

বিশেষ সুবিধা না পেয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মেম্বারের অভিযোগ

সংবাদদাতা / ১৫৬ পাঠক ভিউ
আপডেট সময় : রবিবার, ৭ আগস্ট, ২০২২

লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ একজনের ত্রান আরেকজনকে দেওয়া হবে না এই নিয়ম চালু করায় বিপাকে পড়েছে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার পাটিকাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান। ওই ইউপির সদস্যরা অবৈধভাবে সুবিধা আদায় করতে না পেয়ে উল্টো চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।

জানা গেছে ওই উপজেলার তরুন আওয়ামীলীগ নেতা মজিবুল আলম সাদাত, ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবার পর থেকে প্রকৃত হতদরিদ্রদেরকে সঠিকভাবে সুবিধা দেয়ার জন্য নতুন কিছু নিয়ম চালু করেন, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, উপকারভোগীদের তালিকা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ঝুলিয়ে দেয়া, যারযার ত্রান সে উপস্থিত হয়ে নিয়ে যাওয়া, একজনের ত্রাণ আর একজনকে না দেয়া, ত্রাণ গ্রহীতাদের ছবি তুলে কম্পিউটার ডাটাবেইজে সংরক্ষণ করা।

অবৈধ অর্নৈতিক সুবিধা নিয়ে শিশু ভাতা, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, দুস্থভাতার কার্ড করে না দেয়া, বন্যার্তদের মাঝে দ্রুত সরকারি ত্রাণ পৌছে দেয়া, টিআর ও কাবিখা প্রকল্প বাস্তবায়নের কমিটির সকল সদস্যদের মতামত প্রাধান্য দেয়া, ইউপি সদস্যদেরকে অবৈধভাবে ত্রাণের গোপন স্লিপ না দেয়া, জিআর এর চাল বিতরণে অনিয়ম না করা।

ফলে বিপাকে পড়ে কিছু ইউপি সদস্য। তারা আতাত করে চেয়ারম্যানকে উল্টো বিপাকে ফেলার জন্য নানান অভিযোগ তুলে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেন।

এদিকে চেয়ারম্যানের কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা না পেয়ে ইউএনও কাছে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে দাবী করেন চেয়ারম্যান মজিবুল আলম শাহাদাত বলেন, ওই মেম্বাররা সরকারি সুবিধা দেওয়ার কথা বলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অবৈধ লেনদেন করে আসছিল, এবিষয়ে অনেকেই আমার কাছে তাদের বিরুদ্ধে মৌখিক অভিযোগ করেন। সেই অবৈধ লেনদেনে বাধা দিলে তারা আমার উপর নাখোশ হন।

তিনি বলেন, যে কোন রিলিফ বা অনুদান আসলে প্রকাশ্যে মাইকিং করে বলি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুবিধা আপনারা প্রতি জন নিবেন। রিলিফ উপযুক্ত ব্যক্তিদের মাঝে বিতরণ করা হয়। এই নিয়ম গুলো তাদের ভালো লাগছেনা। তারা যে টিআর কাবিখার অনিয়মের কথা বলেন অথচ তারাই ঐ প্রকল্পের চেয়ারম্যান এবং আমি নিজেই একটা প্রকল্পের চেয়ারম্যান হয়েও কাজ শেষ করে আজও তার চেক নেইনি।

যে মেম্বার পশু ও শিশু খাদ্য নিয়ে অভিযোগ করেছে অথচ তিনি উপস্থিত থেকে সেগুলো বিতরণ করা হয়েছে, যার ছবি আমার কাছে সংরক্ষিত আছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের যে টিউবওয়েল বরাদ্দের কথা তারা অভিযোগ করেছেন অথচ চেয়ারম্যান হবার পর থেকে আজও সেই টিউবওয়েল বরাদ্দ আমি পাইনি। সরকারের নিয়মনীতি ও নীতিমালা অনুসরণ করে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ করতে গেলে তারা বাধা দিয়ে সেগুলো ভাগবাটোয়ারা করে নিতে চায়, এতে রাজি না হওয়ায় আজ আমি খারাপ।

চেয়ারম্যান মজিবুল আলম শাহাদাত বলেন, রিলিফ বা অর্থনৈতিক সুবিধা বিতরণের প্রত্যেকটির কমিটি আছে এই কমিটির যারা সদস্য তাদের সবাইকে নিয়ে আলোচনায় বসে তালিকা করবো। এ নিয়মটি তারা মানবে না৷ তারা ব্যক্তিগত ভাবে ভাগ চান। সেখানে তারা সাধারণ জনগণের কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে কার্ড দিবেন। যারা ত্রানের তালিকাভুক্ত হবে শুধু তারাই ত্রান পাবেন, একজনের ত্রান আরেকজনকে দেওয়া হবে না এই নিয়ম গুলো মেনে চলায় তারা আমার বিরুদ্ধে ইউএনও কাছে অভিযোগ দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও মেম্বার কালাম অন্য ৬জন মেম্বার তার বাড়িকে ডেকে নিয়ে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া কাগজে সাক্ষর করে নেয়৷ শুধু তা-ই নয় কর্মসৃজন প্রকল্পে অসহায় দরিদ্র মানুষের নাম দেওয়া ও মেম্বারদের পছন্দনীয় সচ্ছল পরিবারের লোকের নাম না রাখা। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছে তা যদি প্রমাণিত হয় তাহলে আমার উর্ধতন কর্মকর্তা যে ব্যবস্থা নিবে সেটা মেনে নিবো।

স্থানীয়রা জানান, মজিবুল আলম শাহাদাত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ইউনিয়নের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড শুরু করেন সে। সাধারণ মানুষের ন্যায্য অধিকার ফিরে দিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন সে। আর এতেই তাকে সামাজিক ভাবে হেয় পতিপন্ন করতে তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত শুরু করেন প্রতিপক্ষ। তারই রেশ হিসেবে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর মিথ্যা লিখিত দিয়েছেন বলে দাবি চেয়ারম্যান মজিবুল আলম শাহাদাতের।

হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজির হোসেন বলেন, এবিষয়ে এখনও কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে কিছুদিন আগে এবিষয়ে কয়েকজন ইউপি সদস্য মৌখিকভাবে বলেছিলো।উল্লেখ্য – পাটিকাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়ন পরিষদে নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা করে আসছেন।

হঠাৎ করে সদস্যদের না জানিয়ে এজেন্ডাবিহীন কার্যক্রম তৈরি করেন। এতে কখন কি পরিমান বরাদ্দ আসে তা সদস্যদের জানানো হয় না। এ ছাড়া জনস্বাস্থ্য প্রকল্পে বরাদ্দকৃত টিউবওয়েল বিতরণে অনিয়মসহ মোট ৯ টি বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেন ঐ ইউপির ৮ জন সদস্য।#


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিস্তারিত...