নিজস্ব প্রতিবেদক: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা সিলেট থেকেই শুরু করবে আওয়ামী লীগ। বুধবার (২০ ডিসেম্বর) দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হযরত শাহজালাল ও শাহপরানের মাজার জিয়ারত করে নগরীর আলিয়া মাদরাসা মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য দেবেন।এ জনসভাকে ঘিরে দলের নেতা-কর্মীদের মাঝে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ৪ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরকে ঘিরে পুরো সিলেট নগরী নতুন সাজে সাজানো হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সৌন্দর্যবর্ধন ও রাস্তা সংস্কার করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সিলেটের আলিয়া মাদরাসার মাঠে মঞ্চ তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। মঞ্চ তৈরির ক্ষেত্রেও নির্বাচনী আচরণ বিধি মেনে মাঠের পূর্ব দিকে নির্মিত মঞ্চে সর্বসাকুল্যে ৩০০ চেয়ারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসূচি অনুযায়ী, বুধবার (২০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে বিমানে ঢাকা থেকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন। সেখানে পৌঁছেই তিনি সিলেটের দুই ওলির মাজার জিয়ারত করবেন। মাজার জিয়ারতের পর মধ্যাহ্নভোজ শেষে নগরীর সরকারি আলিয়া মাদরাসা মাঠে নির্বাচনী জনসভায় যোগ দেবেন শেখ হাসিনা।
জানা যায়, স্বাধীনতার পর থেকে দেশের রাজনীতিতে সিলেটকে নিয়ে এক ধরনের ‘মিথ’ তৈরি হয়েছে। সিলেট-১ আসনে যে দল বিজয়ী হয় সেই দলই সরকার গঠন করে। সাধারণ মানুষ মনে করে, হযরত শাহজালাল রহ. ও হযরত শাহপরান রহসহ ৩৬০ আউলিয়ার স্মৃতি বিজড়িত পুণ্যভূমির এ আসনটি সব দলের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের প্রধানরা সিলেটের দুই মাজার জিয়ারত শেষে ঐতিহ্যবাহী আলিয়া মাদরাসা মাঠে জনসভার মাধ্যমে ভোটের প্রচারণা শুরু করেন। এবারও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ধারা বজায় রাখছেন। এই জনসভা সফল করতে সিলেটের সব নির্বাচনী আসন থেকেই বিপুল পরিমাণ নেতাকর্মীর সমাগম ঘটবে বলে আশা করছে দলটির নেতাকর্মীরা।সরেজমিনে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিলেটে আগমন উপলক্ষে আলিয়া মাদরাসা মাঠের জনসভাস্থল ও এর আশপাশ এলাকা, রিকাবীবাজার সড়ক, কোর্ট পয়েন্ট, দরগা গেইট এলাকা পর্যন্ত লাগানো হয়েছে শব্দ যন্ত্র।এদিকে, মঙ্গলবার দুপুরে জনসভাস্থল পরিদর্শন করেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল। এসময় তারা জনসভা মঞ্চ ও মাঠের সার্বিক কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা সফলে সিলেটবাসীর সহযোগিতা কামনা করে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আগামীকাল আলিয়া মাদরাসার মাঠে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা জনসমুদ্রে রূপ নেবে। এই জনসভার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হবে এবারও সিলেটের সব কয়টি আসন সিলেটবাসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দেবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে নগরীজুড়ে ৪ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। নগরীতে বৃদ্ধি করা হয়েছে পুলিশের টহল। সাদা পোশাকে মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। জনসভা মঞ্চ ও আশপাশ এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা।
সিলেট সিটি মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে সিলেটকে নতুন রূপে সাজানো হচ্ছে। সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলছে। কিছু কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। আলিয়া মাদরাসা মাঠে ১০ লাখ মানুষের সমাগম ঘটাতে আমরা কাজ করছি।তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরের মতো পবিত্র নগরী সিলেট থেকে তার আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করবেন। সিলেটের উন্নয়নে তার অসামান্য অবদান রয়েছে। সিলেটবাসী আসন্ন নির্বাচনে এর প্রতিদান দেবেন।সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, আলিয়া মাদরাসা মাঠ প্রধানমন্ত্রীর জনসভা স্মরণকালের বৃহৎ জনসমাবেশ করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিভাগের প্রতিটি জেলা-উপজেলা থেকে দলীয় নেতা-কর্মীরা এসে উপস্থিত হবেন।