• মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ১০:৫৯ অপরাহ্ন

ইয়াবা ডন হয়ে ওঠেন আশুগঞ্জের কানা মোশারফ

Reporter Name / ১৩৬ Time View
Update : বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

শুভ হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার : কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে কাঠ আমদানি করতেন মোশারফ আলম ওরফে কানা মোশারফ । ক্রমেই তিনি জড়িয়ে যান ইয়াবা ব্যবসায়। পার্শ্ববর্তী মিয়ানমার থেকে ইয়াবার চালান আনতেন তিনি। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর গ্রামের  বাসিন্দা। দিন যত যাচ্ছে ততই আলোচনায় আসছে এই ইয়াবা সম্রাট কানা মোশারফ। খুব দ্রুতই মাফিয়া হয়ে ওঠেন মোশারফ আলম ওরফে কানা মোশারফ। রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় মাদক কারবারি হিসাবে পরিচিত রয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা যায়, কাগজে কলমে মোশারফ আলম ওরফে কানা মোশারফ একজন ব্যবসায়ী পরিচয় দেন। তিনি কি ব্যবসা করেন আজও কেও জানে না। অভিযোগ আছে , টেকনাফ স্থলবন্দরের সিএন্ডএফ (আমদানি- রফতানিকারক) ব্যবসায়ী ইয়াবার ডন সাইফুলের বন্ধু। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে কাঠ আমদানি করতেন তিনি। আশুগঞ্জে ব্যবসাও চালু করেন। এই ব্যবসার পাশে পাশাপাশি করেন ইয়াবার ব্যবসা। তবে কাঠ আনার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে এনেছেন ইয়াবার বড় বড় চালান সরবরাহ করেন রাজধানীর ৩৪ টি পয়েন্টে।

সরকারের বিভিন্ন বাহিনীর সমন্বয়ে করা ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সর্বশেষ তালিকায় ‘এক নম্বর ইয়াবা ব্যবসায়ী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল টেকনাফের শীলবনিয়া পাড়ার এই হাজী সাইফুল করিমকে। তার বিরুদ্ধে দুই ডজনেরও অধিক মাদক মামলা রয়েছে। তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জের সোহাগপুর গ্রামের মোশারফ ওরফে কানা মোশারফ। তিনি রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন।

টেকনাফের ইয়াবার ডন সাইফুল করিমের ভগ্নিপতি সাইফুল ইসলাম ও তার বন্ধু মোশারফ আলম ওরফে কানা মোশারফ এই ইয়াবা সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। এছাড়াও তার সাথে রাজধানীর একজন নামধারী সাংবাদিক সরাসরি জড়িত। অভিযোগ আছে, মিয়ানমারে মংডুর আলী থাইং কিউ এলাকার মোহাম্মদ ইব্রাহিমও এর সঙ্গে মোশারফ আলম ওরফে কানা মোশারফ ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব।

প্রত্যেক গোয়েন্দা রিপোর্টের শীর্ষে টেকনাফের সাইফুল করিম এবং তার পরিবারের সদস্যদের নাম রয়েছে। তার পাঁচ ভাইয়ের বিরুদ্ধেও ইয়াবা ব্যবসায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার নামে মামলা করে। তারা রাজধানীতে মোশারফ আলম ওরফে কানা মোশারফের মাধ্যমে ইয়াবা সরবরাহ করেন।

সর্বশেষ টেকনাফ পুলিশের অভিযান চালিয়ে গত ৩ মে -২০২০ সালে সাইফুলের ছোট ভাই মাহবুবুল করিম, রাশেদুল করিমকে টেকনাফের নিজ বাড়ি থেকে ১০ হাজার ইয়াবা ও চারটি অস্ত্রসহ আটক করে পুলিশ। এরপর রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় মাদক কারবারি মোশারফ আলম ওরফে কানা মোশারফের নাম সামনে আসে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের শিলবুনিয়া পাড়া এলাকার ডা. মো. হানিফ প্রকাশ ওরফে হানিফ ডাক্তারের ছেলে সাইফুল করিম। চট্টগ্রাম মহসিন কলেজে পড়াশোনার সময় ১৯৯৭ সালে নগরীর খাতুনগঞ্জ এলাকায় টেকনাফের বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের পণ্য কেনা-বেচায় সহায়তা করে খরচ জোগাতেন তিনি। অভাব অনটনে দিন চলতো তার।

ওই সময় তার দাদার বাড়ি মিয়ানমারের মংডু এলাকার ইয়াবা ডন ও মিয়ানমারের মোস্ট ওয়ান্টেড মগা সুইবিন নামক এক আন্তর্জাতিক ইয়াবা কারবারির সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে সাইফুল ও মোশারফ আলম ওরফে কানা মোশারফের। ওই সময় প্রথম দেশে ইয়াবার বড় চালান প্রবেশ করে তার হাত ধরে।

সেই মগা সুইবিনের পৃষ্টপোষকতায় ২০০০ সালের দিকে টেকনাফ স্থলবন্দরে এসকে ইন্টারন্যাশনাল নামে আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ ব্যবসা শুরু করেন তিনি সাইফুল। ২০০১ সালে টেকনাফের বিএনপি নেতা আব্দুল্লাহর বড় বোনকে বিয়ে করে স্থলবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নেন। ওই বছরই মিয়ানমার থেকে পণ্য অমদানির আড়ালে কৌশলে পুরোদমে ইয়াবা আমদানি শুরু করেন সাইফুলের শ্যালক জিয়াউর রহমান, তার বন্ধু আশুগঞ্জের কানা মোশারফ।

মিয়ানমারে স্থাপিত ৩৮টি ইয়াবা কারখানায় উৎপাদিত মাল বিক্রির একমাত্র মার্কেট হচ্ছে বাংলাদেশ। এই ইয়াবা ব্যবসার সুবিধার্থে মিয়ানমার- বাংলাদেশ চলাচলের জন্য একাধিক জাহাজও কিনেছে সাইফুল। তার সহযোগি আশুগঞ্জের  ইয়াবা ডন মোশারফ আলম ওরফে কানা মোশারফ, একজন নারী নেত্রী এবং আরেক বিএনপি নেতা যিনি অবৈধ হুন্ডি ব্যবসার সাথে সরাসরি জড়িত বলে জানা গেছে। তারাই  মূলত  ইয়াবা বিক্রির মুলহোতা। এবিষয়ে  মোশারফ আলম ওরফে কানা মোশারফের  মোবাইলে সত্যতা জানতে বার বার  ফোন করা হলেও রিসিভ করেননি। তাই তার বক্তব্য জানা যায়নি

Please Share This Post In Your Social Media


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category