• রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ১১:১০ অপরাহ্ন

টেকনাফে বাবুল মেম্বার’কে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১৫

Reporter Name / ১১১ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৩

কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ টেকনাফের কাটাখালী এলাকায় র‍্যাব-১৫ অভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে পার্শ্ববর্তী দেশ হতে চোরা- কারবারির অন্যতম মূলহোতা কক্সবাজারের শীর্ষ মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ী শীর্ষ সন্ত্রাসী জাফরুল ইসলাম প্রকাশ বাবুল মেম্বার (৪২), পিতাঃ আব্দুর রশিদ, টেকনাফ, কক্সবাজার কে গ্রেফতার করে।

অপরাধীর কাজ থেকে উদ্ধার করা হয়েছেঃ ৫৫ হাজার পিস ইয়াবা, ১টি বিদেশী পিস্তল, ১টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ। প্রাথমিক ভাবে জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত বাবুল কক্সবাজারের টেকনাফ এলাকার একজন অন্যতম শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও শীর্ষ সন্ত্রাসী। স্থানীয় এলাকা টেকনাফে সে পাশ্ববর্তী দেশ হতে মাদক চোরা- চালানের গডফাদার হিসেবে চিনতো।

গ্রেফতারকৃত বাবুল মাদক ব্যবসা সহ বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য এলাকায় ২০-২৫ জনের একটি চক্র গড়ে তোলে। গ্রেফতারকৃত বাবুল মাদক ব্যবসার পাশাপাশি এলাকায় চাঁদাবাজি, স্বর্ণ চোরাচালান, অবৈধ অস্ত্র, জোরপূর্বক ভাবে অবৈধ বালু উত্তোলন, অবৈধ ভাবে চোরাই পথে গবাদি পশু চোরা- চালান, অবৈধ ভাবে পাহাড় কেটে মাটির ব্যবসা সহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতো বলে জানা যায়।

জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত বাবুল ২০০৫ সালের পরবর্তী তে টেকনাফ এলাকায় মাদক ও অন্যান্য চোরা- চালানের সাথে জড়িয়ে পরে এবং পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে অবৈধ পথে মাদক এনে দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দিত। ২০১৭ সালে এলাকার অপর এক মাদক ব্যবসায়ী লুৎফুর রহমানের মাধ্যমে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পলাতক তালিকা ভুক্ত রোহিঙ্গা শীর্ষ সন্ত্রাসী নবী হোসেনের সাথে তার পরিচয় হয়। নবীর সাথে পরিচয়ের পর থেকে গ্রেফতারকৃত জাফর বিশদ আকারে মাদক সিন্ডিকেটের সাথে জড়িয়ে পড়ে।

গ্রেফতারকৃত জাফর পলাতক নবী হোসেনের সাথে চুক্তি করে চিংড়ি ব্যবসার আড়ালে রাতে আধারে পার্শ্ববর্তী দেশে হতে নাফ নদী দিয়ে মাদক, অস্ত্র ও স্বর্ণ চোরা- চালান করে আসছে বলে জানা যায়। সীমান্ত অঞ্চল দিয়ে মাদক সহ অন্যান্য চোরা- কারবারির সময় তার দলের ২০-২৫ জন সশস্ত্র সদস্য পাহাড়া দিয়ে চালান বাংলাদেশে পৌঁছাতো।

গ্রেফতারকৃত বাবুল পার্শ্ববর্তী দেশ হতে সপ্তাহে ৪/৫টি ইয়াবার চালান এনে অস্ত্রধারী কেরিম্যানদের সহযোগিতায় বালুখালী ক্যাম্প সংলগ্ন তার নিয়ন্ত্রিত বেশকিছু চিংড়ির খামারের ভিতরে রাখতো বলে জানা যায়। পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আনা প্রতি চালানে প্রায় ২ লক্ষ পিস ইয়াবা থাকতো এবং তা দেড় লক্ষ টাকায় কিনে এনে প্রায় ৩/৪ লক্ষ টাকায় বিক্রয় করতো। এছাড়াও গ্রেফতারকৃত বাবুল পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে সীমান্ত দিয়ে অবৈধ ভাবে স্বর্ণ এনে তা চট্টগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রেরণ করতো।

গ্রেফতারকৃত জাফরুল ইসলাম ২০০১ সালে চট্টগ্রাম একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়নে ভর্তি হয়ে ১ বছর পড়াশোনা করার পর তা বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে ২০০৩ সালে স্থানীয় কলেজ হতে বিএ পাশ করে। সে ২০০৫ সালে পালংখালি এলাকায় জাবু নামের এক ব্যক্তির খুনের দায়ে ঐ মামলার আসামি হয় এবং চট্টগ্রাম সহ বিভিন্ন স্থানে আত্ম- গোপনে থাকে। তার বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে টেকনাফ থানায় একটি মাদক মামলা দায়ের হয়। সে ২০১৭ সালে জাবু হত্যা মামলায় প্রায় ২ মাস কারাভোগ করে সে জামিনে বের হয়ে আসে।

সে অবৈধ অস্ত্র মাদক ব্যবসা, স্বর্ণ চোরা- চালান সহ অন্যান্য অপরাধ মূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে অবৈধ ভাবে কক্সবাজারে বিলাশ বহুল ফ্ল্যাট, ডামট্রাক, ট্রাক, এলাকাতে জমি এবং মাছের প্রজেক্টসহ প্রায় ৫০ কোটি টাকার বিপুল পরিমান সম্পদ গড়ে তোলে। তার বিরুদ্ধে কক্সবাজারের উখিয়া থানায় হত্যা, মাদক সহ বিভিন্ন অপরাধে ০৯টির অধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Please Share This Post In Your Social Media


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category