• মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৪:৪০ অপরাহ্ন

নোয়াখালীতে পরকীয়ার জেরেই মা- মেয়ে খুন

Reporter Name / ১১৮ Time View
Update : বুধবার, ১৪ জুন, ২০২৩

আহসান হাবীব, স্টাফ রিপোর্টারঃ পরকীয়ার জের ধরেই নোয়াখালীতে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় আটক ওমান প্রবাসী আলতাফ হোসেন (২৮) প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানিয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। বুধবার (১৪ জুন) সন্ধ্যা ৬টায় সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার মো. শহিদুল ইসলাম এসব বিষয় তুলে ধরেন।

এ ঘটনায় আর কেউ জড়িত আছে কিনা সে বিষয়টিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খতিয়ে দেখছে বলে জানান পুলিশ সুপার। পুলিশ সুপার জানান, রং নাম্বারে কলের সূত্র ধরে ৪ মাস আগে আলতাফ হোসেনের সঙ্গে নোয়াখালী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ফজলে আজিম কচি মিয়ার স্ত্রী নূর নাহার বেগমের (৪০) পরিচয় হয়।

পরিচয়ের এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সম্পর্কের একপর্যায়ে নূর নাহার বেগম প্রবাসী আলতাফকে দেশে এসে ব্যবসা করতে বলে। ব্যবসায়ের প্রাথমিক মূলধন হিসেবে আলতাফকে আড়াই লাখ টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেন নূর নাহার। তার আশ্বাসে ওমানের ভিসা বাতিল করে গত ৮ জুন পরিবারের সবার অজান্তে দেশে ফিরে আসে আলতাফ।

দেশে এসে টাকার জন্য নূর নাহারের বাসায় ৪-৫ বার দেখা করে তাকে টাকা দিতে বললে নূর নাহার তাতে কালক্ষেপণ করতে থাকে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নূর নাহারের ক্ষতি করার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিতে থাকে আলতাফ। পুনরায় টাকা চাওয়ার জন্য সকাল আনুমানিক ১১টার দিকে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীর গুপ্তাংক বারলিংটন মোড় এলাকায় নূর নাহারের বাসায় গেলে তিনি আজও টাকা দিতে অস্বীকার করেন।

কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে সঙ্গে নেওয়া নতুন একটি ছোরা দিয়ে এলোপাতাড়ি নূর নাহারকে কোপাতে থাকে আলতাফ। এসময় নুর নাহার বেগমের মেয়ে এসএসসি ফল প্রার্থী ফাতেহা আজিম প্রিয়ন্তী (১৭) মায়ের চিৎকার শুনে তার মাকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে আসলে আলতাফ হোসেন তাকেও উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে।

ছুরিকাঘাতে আহত প্রিয়ন্তী দৌড়ে নিচে নেমে আসলে তার পিছু পিছু আলতাফ হোসেন ও দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। স্থানীয়রা প্রিয়ন্তীকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আর নূর নাহার বেগম রক্তক্ষরণ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

আলতাফ হোসেন লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের চর মেহের আব্দুল মুনাফের বাড়ির মৃত আবুল কালামের ছেলে। এর আগে, ওই বাসার এক ভাড়াটিয়া নারী জানান, সকালে দ্বিতীয় তলা থেকে চিৎকার করতে করতে প্রিয়ন্তী রক্তাক্ত অবস্থায় দরজার সামনে আসে। পরে দরজা খুলে দিলে সে মেঝেতে পড়ে যায়। পরে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আমিন নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, ওই বাসা থেকে এক যুবক বের হওয়ার সময় তাকে আটক করতে চাইলে প্রথমে সে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে তাকে প্রায় ২০০ মিটার দূর থেকে ধাওয়া করে আটক করেন তারা। এ সময় ওই যুবকের জামা-কাপড় রক্ত মাখা ছিল। পরে স্থানীয়রা প্রিয়ন্তীদের দোতলার বাসায় গিয়ে দেখেন তার মা নুর নাহারও রক্তাক্ত অবস্থায় এক কক্ষে পড়ে রয়েছেন।

এ ঘটনায় সোনাপুর- মাইজদী প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন স্থানীয়রা। বিকেল ৪টা থেকে এ বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিক্ষোভে প্রায় ১ হাজার স্থানীয় জনগণ ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।

Please Share This Post In Your Social Media


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category