1. mahadihasaninc@gmail.com : bdccrimebarta :
বিশ্বে শান্তি বজায় রাখতে বাংলাদেশ অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে কাজ করছে - বিডিসি ক্রাইম বার্তা

মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ১১:৫২ পূর্বাহ্ন

বিশ্বে শান্তি বজায় রাখতে বাংলাদেশ অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে কাজ করছে

বিশ্বে শান্তি বজায় রাখতে বাংলাদেশ অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে কাজ করছে

৩৫ বছর ধরে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সর্বোচ্চ শাস্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ এবং সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসেবে বাংলাদেশ অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে কাজ করে চলেছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ আজ একটি দায়িত্বশীল ও নির্ভরযোগ্য নাম।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সর্বজন স্বীকৃত এবং বিশ্বের বুকে রোল মডেল। এই অর্জনের পিছনে রয়েছে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর চৌকস, পরিশ্রমী ও নিবেদিতপ্রাণ সদস্যদের অবদান ও আত্মত্যাগ।’

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের ৩৫ বছর উদযাপনের ‘অত্যন্ত গৌরব ও আনন্দের এই শুভক্ষণে’ শেখ হাসিনা জাতিসংঘ মিশনে কর্মরত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীসহ সব শান্তিরক্ষীকে শুভেচ্ছা জানান। সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০২৩’ উদযাপন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

‘জাতির পিতার পররাষ্ট্রনীতি, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতার অঙ্গীকার ও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুসরণ করে বাংলাদেশ জাতিসংঘের ‘ব্লু হেলমেট’ পরিবারের সদস্য হয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে যোগ দেয়। পরবর্তীতে ১৯৮৯ বাংলাদেশ পুলিশ এবং ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ নৌ ও বিমান বাহিনী শাস্তি প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত হয়। গত ৩৫ বছর ধরে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সর্বোচ্চ শাস্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ এবং সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসেবে বাংলাদেশ অত্যন্ত সুনামের সাথে কাজ করে চলেছে।

‘জাতির পিতার আদর্শ অনুসরণ করে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘শান্তিরক্ষা মিশন ছাড়াও অন্যান্য আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে আমরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ ও অবদান রাখছি। আমরা ১৯৯৭ সালে জাতিসংঘে ‘কালচারাল অব পিস’ প্রস্তাব উত্থাপণ করি, যা ১৯৯৯ সালে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। সেই থেকে প্রতিবছর জাতিসংঘে বাংলাদেশের ফ্লাগশিপ রেজুলেশন কালচারাল অব পিস সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়ে আসছে। পরবর্তীতে, জাতিসংঘ ২০০০ সালকে ‘ইন্টারন্যাশনাল ইয়ার অব কালচারাল অব পিস’ হিসাবে ঘোষণা করে এবং ২০০১-২০১০ সালকে ‘কালচারাল অব পিস অ্যান্ড ডিকেড অব নন ভায়োলেন্স’ হিসাবে ঘোষণা করে।

তিনি বলেন, ‘শান্তির বার্তাকে স্থায়ী করতে এবং এজেন্ডা ২০৩ বাস্তবায়নে কালচারাল অব পিস প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য বলে আমার বিশ্বাস। নারীর অধিকার এবং জেন্ডার সমতা নিশ্চিতে আমাদের পদক্ষেপ ওমেন, পিস সিকিউরিটি এজেন্ডা’ তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখছে।’

‘বিশ্বে শান্তি নিশ্চিত করা এখন অতীতের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে’ উল্লেখ শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রযুক্তির সাম্প্রতিক প্রসার ও অগ্রযাত্রার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে অপশক্তিসমূহের নতুন নতুন হুমকি। ফলে, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে শান্তিরক্ষীদের বহুমাত্রিক জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। তাই শান্তিরক্ষা মিশনসমূহ উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে সমৃদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তা এখন বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা যাতে বিশ্বের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং এবং বিপদজনক অঞ্চলসমূহে সৃষ্ট জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারে সেজন্য আমরা তাদের সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ দিয়ে সর্বদা প্রস্তুত রেখেছি। মিশন এলাকার পরিবেশ, আবহাওয়া ও ভূমির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নত প্রযুক্তির সামরিক সরঞ্জামাদিসহ পোশাক ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর সরবরাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে। আমরা বাংলাদেশ কন্টিনজেন্টসমূহে অত্যাধুনিক মাইন-রেজিস্ট্যান্ট এ্যাম্বুশ প্রটেক্টেড যানবাহন এবং শান্তিরক্ষীদের যোগাযোগের জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘২০২৩ সালের আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘ পিস বিগিনস উইথ মি’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি। এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে জাতির পিতার দেখানো পথে আমরা বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাব এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকে একটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব উপহার দিব- আজকের দিনে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।’

বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা যাতে আরও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জাতিসংঘের আহ্বানে সাড়া দিতে পারেন, সে জন্য আমাদের সরকারের সব প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আমার প্রত্যাশা, বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা তাদের দক্ষতা, পেশাদারিত্ব, সাহস ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে দেশের সম্মান ও ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রাখবে।

তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, বাংলাদেশ পুলিশ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ এই আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

সরকার প্রধান বলেন, ‘বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন ও কার্যক্রমে বাংলাদেশের ৭ হাজার ৩৬ শান্তিরক্ষী নিয়োজিত আছেন। এই সংখ্যা বিশ্বে নিয়োজিত সর্বমোট শান্তিরক্ষীর প্রায় ৯.৮% শতাংশ। এর মধ্যে রয়েছে ৫৭২ জন বাংলাদেশি নারী শান্তিরক্ষী। আমরা নারী শান্তিরক্ষীদের বৃদ্ধির প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।’

Please Share This Post In Your Social Media


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2023 bdccrimebarta.com