• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:০০ অপরাহ্ন

সৈয়দপুরে খালিশা বেলপুকুর স্কুল এন্ড কলেজে অর্ধকোটি টাকার নিয়োগ বানিজ্য

Reporter Name / ১৬১ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২৩ মে, ২০২৩

মোঃ মাইনুল হক (বিশেষ প্রতিনিধি): নীলফামারীর সৈয়দপুরের আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে খালিশা বেলপুকুর স্কুল এন্ড কলেজের চারটি পদে প্রায় অর্ধকোটি টাকার নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ সৈয়দ আমিরুল ইসলাম ও গর্ভনিং বডির সভাপতি এরশাদ আলী লেবুর যোগসাজসে নানা অনিয়ম-দূর্নীতি ও পুলিশি পাহারার মধ্য দিয়ে স্কুল গেটে তালা ঝুলিয়ে মঙ্গলবার (২৩ মে) সম্পন্ন হয় নিয়োগ প্রক্রিয়া। নিয়োগ পরীক্ষার আগেই প্রার্থীদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে লোক দেখানো নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হয়। এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অফিস সহায়ক পদে সভাপতির নিজের ভাতিজাকে নিয়োগ দেয়া হয়।

সরেজমিনে স্থানীয়দের দেয়া তথ্য মতে অফিস সহায়ক পদে প্রতিষ্ঠানের সভাপতির ভাতিজা রিমন ইসলামকে, অফিস সহকারী পদে মমিনুর ইসলাম, নিরাপত্তাকর্মী পদে আশিকুর রহমান ও আয়া পদে হাসি আক্তারকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা নিয়েছে এবং তার বিনিময়ে তাদের নিয়োগ দেয়া হবে বলে জানা যায়। নিয়োগ পরীক্ষার পূর্ব মুহুর্তে এ বিষয়ে অধ্যক্ষের সাথে কথা হলে তিনি বলেন এগুলোর কোনো ভিত্তি নেই।

নিয়োগ পরীক্ষার আগে কারা নিয়োগ পাবে এটা বলা সম্ভব নয়। ওই নিয়োগের সকল কার্যক্রম ডিজি প্রতিনিধির পরিচালনা করার কথা থাকলেও ডিজি প্রতিনিধির অনুপস্থিতিতে নিয়মবহির্ভূতভাবে নিয়োগের কার্যক্রম পরিচালনা করছিল সৈয়দপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। পরে স্থানীয়দের চাপে প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ নিয়ে আসে ডিজি প্রতিনিধিকে।

কিন্তু নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার পর পরই ফলাফল ঘোষণা না করেই নিয়োগ প্রক্রিয়ার ডিজি প্রতিনিধি সৈয়দপুর বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম আহমেদ ফারুক ও সদস্য সৈয়দপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাঈদ মোঃ আব্দুল ওয়াহিদ চলে যেতে ধরলে সংবাদকর্মীদের তোপের মুখে সেখানেই ফলাফল ঘোষনা করতে বাধ্য হন। ফলাফল ঘোষনার পর দেখা যায় স্থানীয়রা সভাপতির ভাতিজা সহ যাদের নিয়োগ দেওয়ার কথা স্থানীয়রা বলেছিল তাদেরকেই নিয়োগ দেয়া হয়।

জানা যায়, ‘গেল বছরের ৫ ডিসেম্বর একটি জাতীয় দৈনিক ও একটি স্থানীয় পত্রিকায় ওই প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী, অফিস সহায়ক, নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া পদের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকেই অধ্যক্ষ ও সভাপতি মিলে বেশ কয়েকজন প্রার্থীর কাছ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। সভাপতি ও অধ্যক্ষের পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে গিয়ে স্থানীয় ও গর্ভনিং বডির কয়েকজন সদস্যদের প্রতিবাদে এর আগে দুইবার নিয়োগ পরীক্ষা পন্ড হয়ে যায় নিয়োগ প্রক্রিয়া।

এছাড়াও নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়ে সৈয়দপুর আমলি আদালতে একটি মামলাও দায়ের করেন ওই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির দুই অভিভাবক সদস্য। যার মামলা নং- অন্য ৯২/২৩। মামলাটি আমলে নিয়ে গত ১১ মে একতরফা শুনানি শেষে নিয়োগ বন্ধের নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন বিজ্ঞ আদালত। গত ১৪মে বিবাদী পক্ষের একতরফা শুনানিতে নিষেধাজ্ঞার আদেশটি ভ্যাকেট হয়। উভয় পক্ষের আপত্তি শুনানীর জন্য ২৪ মে দিন ধার্য করা হলেও শুনানীর আগের দিন অধ্যক্ষ ও সভাপতির যোগসাজসে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।’

নানা অভিযোগ ও আদালতের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ সৈয়দ আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এর আগেও দুইবার পরীক্ষা নেয়ার চেষ্টা করেছি। বিভিন্ন কারণে তা বাতিল হয়ে গেছে। এজন্য আজকে প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালনা করছি। আদালতে মামলা হয়েছে না কি হয়েছে সেটি আমি দেখবো। আমিও আইন নিয়ে পড়েছি। আমার চেয়ে কেউ আইন ভালো বুঝে না।’প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি এরশাদ আলী লেবুর সাথে অভিযোগের কথা বলতে গেলে তার ক্যাডার বাহিনী বাধা দেয় সংবাদকর্মীদের।

নিয়োগ পরীক্ষার বিষয়ে ডিজি প্রতিনিধি সৈয়দপুর বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম আহমেদ ফারুকের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি কোনো মন্তব্য না করে বিষয়টি এড়িয়ে যান। এবিষয়ে সেখানে উপস্থিত সৈয়দপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি কথা বলতে অস্বীকৃতি জানালে মুঠোফোনে জেলা শিক্ষা অফিসার হাফিজুর রহমান বলেন, ‘মামলার নিষেধাজ্ঞার আদেশ ভ্যাকেট হলেও শুনানির আগে নিয়োগের আদেশ দেয়া না হলেও যদি নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া তাহলে সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হবে। এছাড়াও বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি।

Please Share This Post In Your Social Media


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category