• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ

সারা বাংলা চেইনশপ উধাও কোটি টাকা আত্নসাত,স্ট্যাটাস দেওয়ায় মামলা দিয়ে হয়রানী!

Reporter Name / ৫৫ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ, ২০২৪

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ চমকদার বিজ্ঞাপন লোভনীয় অফার দিয়ে প্রতিষ্ঠা করা সারা বাংলা চেইনশপ নামের সুপারশপ এখন উধাও। মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে সারা বাংলা চেইনশপ নামে একটি সুপারশপের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে অর্ধ শতাধিক শেয়ার হোল্ডারের কাছে শেয়ার বিক্রি করে শেয়ার বিক্রির কোটি টাকা আত্নসাতের অভিযোগ উঠেছে ইকবাল হোসেন ওরফে ইকু ইকবাল ও তার দুই ভাই নূর হোসেন ও মোঃ মনির হোসেন নামে তিন প্রতারকের বিরুদ্ধে। ইকবাল হোসেন ইকু ও তার ভাইদের প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্নসাৎ নিয়ে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় মোহাম্মদ রোমান হাওলাদার নামে এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ রয়েছে অভিযুক্ত প্রতারক ইকবাল হোসেন ইকু ওরফে ইকু ইকবালের বিরুদ্ধ। এছাড়া মামলা মিমাংসার কথা বলে তার বিরুদ্ধে দেওয়া পূর্বের স্ট্যাটাস মিথ্যা স্বীকার করে পুনারায় স্ট্যাটাস দিতে বাধ্য করে ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিক’কে আইনি জালে ফাঁসানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে মর্মে অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

অন্যদিকে ইকবাল হোসেন ইকু প্রশাসন ও আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়াতে এলাকায় একটি সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে ওই সংগঠনে রাজনৈতিক ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন ব্যক্তিবর্গকে জড়িয়ে তাদের অগোচরে অর্ধ শতাধিক মানুষের কাছে থেকে প্রতারণার মাধ্যমে আত্নসাতকৃত অর্থ হজম করার চেষ্টা চালাচ্ছেন মর্মে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চর কমলাপুর গ্রামের মৃত খালেক মাওলানার ছোট ছেলে ইকবাল হোসেন ওরফে ইকু ইকবাল ও তার দুই ভাই মোঃ মনির হোসেন ও নূর হোসেন সহ আরো বেশ কয়েকজন মিলে ২০১৫ সালে সিরাজদিখান বাজারস্থ শিকদার জেড এইচ শপিং কমপ্লেক্সে ভবনের নিচ তলা ভাড়া নিয়ে সারা বাংলা চেইনশপ নামে একটি সুপারশপের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করেন।

সুপারশপের ব্যবসায় লভ্যাংসের স্বপ্ন দেখিয়ে অর্ধশতাধিক মানুষের কাছে শেয়ার প্রতি ১০ হাজার ৬ শত টাকা থেকে শুরু করে লাখ পর্যন্ত বিক্রি করেন ইকবাল হোসেন ইকু ও তার ভাইয়েরা। লাভের আশায় লোভে পরে ব্যবসার শেয়ার কিনে এমন ভাবে প্রতারিত হতে হবে কে জানতো! কিন্তু  কথায় আছে “চোর যে শোনে না ধর্মের বানী”। হঠাৎ করে ব্যবসা গুটিয়ে একে একে এলাকা ত্যাগ করেন অভিযুক্ত ইকবাল হোসেন ওরফে ইকু ইকবাল ও তার  দুই ভাই সহ সারা বাংলা চেইনশপের সংশ্লিষ্টরা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সারাবাংলা চেইনশপ কেলেঙ্কারীর মূল হোতা ইকবাল হোসেন ইকু  এখানকার টাকা নিয়ে বর্তমানে ঢাকার গাজীপুরে একটি কিন্ডার গার্টেন প্রতিষ্ঠা করে সেখানেই বসবাস করছেন। তার অন্যান্য ভাইয়েরাও সারা বাংলা চেইনশপ কেলেঙ্ককারীর পর থেকে ঢাকাতেই বসবাস করেন। এদিকে প্রতারক ইকুর অভিনব এ প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে অনেকে লাভের আশা ছেড়ে দিয়ে শুধু মূলধন ফিরে পাওয়ার আশায় বছরের পর বছর ঘুরছেন তার কাছে।

কতিপয় কয়েকজন অসাধু সাংবাদিকদের সাথে রেখে এলাকাবাসীদের উৎসাহী করে সারা বাংলা চেইনশপের শেয়ার কিনিয়েছেন। ফলে অনেকে প্রিয় বন্ধু  থেকে শত্রুুতে পরিনত হয়েছেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ২০১৫ সালে ব্যবসার শেয়ার কিনে ২০২৪ পর্যন্ত  ৯ বছরে শেয়ারের লাভের টাকা দূরের কথা মূলধন ফিরত পেতে কয়েক জোড়া জুতা ক্ষয় করেও প্রতারক ইকু ও তার ভাইদের নাগাল পাননি শেয়ার হোল্ডাররা। অনেকে আবার শেয়ারের টাকা ফেরৎ চেয়ে নানা ভাবে হয়রানীর শিকার হয়ে বোবা বনে বসে আছেন। ভুক্তভোগীদের কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে কেনা শেয়ারের টাকা ফেরত পেতে  প্রশাসনের উধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃস্টি আকর্ষন করেছেন। প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী আবিরপাড়া গ্রামের মৃত ডাঃ আবুল খায়েরের ছেলে মিজানুর রহমান (অরুপ) অভিযোগ করে বলেন, ১০ হাজার ৬ শত করে আমি নিজে ৫ টা শেয়ার কিনেছিলাম। আমার হাত দিয়ে আমার বন্ধু বান্ধবদেকেও শেয়ার কিনে দিয়েছিলাম। এখন তারা শেয়ারের টাকা না পেয়ে আমাকেই দোষারোপ করছে। এমনকি এ  নিয়ে অনেক বন্ধুবান্ধব সম্পর্কও ছিন্ন করেছে। ১০ হাজার ৬ শত টাকা করে আমার হাত দিয়ে মোট ৩৫ টার মত শেয়ার কেনা হয়েছিলো। কারো টাকাই কেউ পায় নাই। আমিও পাইনি। বহুবার টাকা ফেরৎ, চাওয়াতে দিচ্ছি পর্যন্তই চালান। এ ব্যপারে সিনিয়ন সাংবাদিকদের সহযোগী কামনা করছি।

চোরমর্দ্দন গ্রামের বাসিন্দা বিপুল শেখ নামে প্রতারণার শিকার আরো এক ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, ২০১৫ সালে ১০ হাজার ৬০ টাকা দিয়ে আমি সারাবাংলা চেইনশপের ব্যবসার শেয়ার কিনি। কিন্তু শেয়ার কেনার পর সেই টাকা আজ পর্যন্ত পাইনি। প্রতারক কুলাঙ্গার ইকু ইকবাল ও তার ভাই মনিরের কাছে টাকার জন্য বহুবার গেছি কিন্তু তাদের দেখা পাইনি। কেউ ৫০ হাজার কেউ ১ লাখ টাকা দিয়েও শেয়ার কিনেছে।  আমার মত বহু মানুষ শেয়ার কিনেছিলো।সবার অবস্থাই আমার মত। কেউই টাকা পায় নাই। আমাদের  এতোগুলো টাকা তারা মেরে দিলো অথচ আমরা কোন প্রতিবাদ করতে পারলাম না। তারা ৫০ থেকে ১০০ জনের মত মানুষের কাছ থেকে শেয়ার বিক্রি করে টাকা নিয়েছে। এরপর উধাও। দেওয়ার কোন খবর নাই। এখন ওরা মানুষের টাকা মেরে এলাকা ছেড়েছে। আমরা পুলিশের কাছেও লিখিত অভিযোগ করে ছিলাম।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের এক সিনিয়র নেতা বলেন,ইকু ইকবাল যে সংগঠনের আড়ালে এসব করে সেটা সব নেতারাই জানেন। এ নিয়ে আমি বহুবার বলেছি। এমনকি স্ট্যাটাসও দিয়েছি। কোন কাজ হয় না। জামাত বিএনপির লোকজনের বিরুদ্ধে কথা বলায় নেতারা আমাদের দেখতে পারে না। আমাদের নেতাদের কাছে আমরা দু্র্বল। তাই আমরা চাইনা আমাদের নেতারা কারো কাছে অসম্মানী হোক। এ ব্যপারে অভিযুক্ত প্রতারক ইকবাল হোসেন ইকু অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, সারাবাংলা চেইনশপ আমার না। আমার ভাইদের ছিলো। আমি আর কিছুই জানি না! অপর দুই অভিযুক্ত নূর হোসেন ও মোঃ মনির হোসেনের সাথে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

Please Share This Post In Your Social Media


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category